যেখানে কন‍্যা শিশুদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো

0
10K

হাবিব রহমান: আমি পৃথিবীর যে দেশেই যাই ইতিহাস খুঁজতে চেস্টা করি।ইতিহাসে শুধু বিজয়ীর গৌরবগাথা নয় বিজিতের দীর্ঘশ্বাসও লেখা থাকে।আর অনেক ইতিহাস বইয়ের পাতায় লেখা থাকেনা স্থানীয় গাইডের কাছ থেকে খুঁজে নিতে হয়।
ইতালীয় পর্যটক এবং বণিক মার্কোপলো যিনি পশ্চিমাদের মধ্যে সর্বপ্রথম সিল্ক রোড পাড়ি দিয়ে চীন দেশে এসে পৌঁছেছিলেন এবং তিনিই সর্বপ্রথম ইউরোপীয় হিসাবে মঙ্গোল সাম্রাজ্যে পা রেখেছিলেন ।তিনি জন্মেছিলেন ইতালীর ভেনিস শহরে।তাঁর সেই জন্মভিটা দেখার জন্য আমি ভেনিস যাই। কয়েকদিন থেকেও কারো কাছ থেকে তাঁর বাড়িটির হদিস বের করতে পারিনি।অথচ তাঁর নামেই ভেনিস ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরটির নামকরণ করা হয়েছিলো।
প্রথমবার তাঁর বাড়িটির খোঁজ না পেয়ে আমার জিদ চেপে যায়।আমি নিউইয়র্ক ফিরে এসে এ ব্যাপারে বিস্তর পড়াশোনা করে আবার দ্বিতীয়বারের মত ভেনিস যাই এবং বাড়িটি খুঁজে বের করতে সক্ষম হই।

প্রসঙ্গটা টানলাম এজন্য যে আমি খুব ছোটবেলা থেকে সৌদি আরব ভ্রমণ শুরু করি।সে সময় থেকেই মক্কা মদীনার বাইরেও অনেক ঐতিহাসিক স্হান দেখা আমার সৌভাগ্য হয়।
কিন্তু একটি জায়গা আমি দীর্ঘ দিনেও খুঁজে বের করতে পারিনি।তাহলো মক্কার সেই জায়গাটি যেখানে আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগে নারী শিশুদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো।আল্লাহর অসীম রহমতে প্রায় প্রতিবছর আমার সৌদি আরব গমনের সৌভাগ্য হয়।মক্কায় গেলেই আমি সে স্হানটি খুঁজে বেড়াই।কিন্তু কেউ হদিস দিতে পারেনা।স্হানীয় পুলিশদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারা উত্তর দেন-আমরা এ ব‍্যাপারে কিছু জানিনা।আল্লাহ ই ভালো জানেন। মক্কায় দীর্ঘবছর বসবাস করছেন এমন বাংলাদেশীদের কাছে জানতে চেয়েও জায়গাটির কোন সন্ধান পাইনি।
অবশেষে দীর্ঘ ৫১ বছর পর ২০২৪ সালে আমি সে অসাধ্য সাধন করি ।অর্থাৎ জায়গাটা খুঁজে বের করতে সক্ষম হই।

লালনের একটা গান আছেনা-
"বাড়ীর কাছে আরশী নগর~
সেথা পড়শী বসত করে
এক ঘর পড়শী বসত করে
আমি~এক দিনও না~
দেখিলাম তারে..."।
আমি প্রতিবার পবিত্র মক্কা নগরী ভ্রমণকালে মসজিদে হারামের পশ্চিম উত্তর কোনে যেখানে হোটেল নিই সে জায়গাটার নাম -জাবালে ওমর।হেরেম শরীফ সংলগ্ন এই স্হানটিতে হায়াত রিজেন্সী,হিলটন সুইটস,মেরিয়ট,ডাবল ট্রি হিলটনসহ আরো কয়েকটি হোটেল রয়েছে।সে সব হোটেল থেকে হাঁটা দূরত্বে হেরেম শরীফ।
মক্কায় থেকে যারা যারা দ্বিতীয়বার ওমরাহ করতে যান তাদেরকে বিবি আয়েশা(রা:) মসজিদে যেতে হয়।সেখান থেকে এহরামের কাপড় পরিধান করে দু রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আবার ফিরে এসে ওমরাহ এর আনুষ্ঠানিকতা সারতে হয়।বিবি আয়েশা(রা:) মসজিদে যেতে যেখান থেকে ট্যাক্সি বা বাস নিতে হয় সেখানে একটি ফ্লাই ওভার।আর সে ফ্লাই ওভারের নীচেই একটি বড় ফুটবল মাঠের মত খালি জায়গা।সেখানেই সেই জায়গাটির অবস্হান।
অথচ দীর্ঘকাল এই এলাকায় আমার বিচরণ থাকলেও সঠিক জায়গাটি খুঁজে বের করতে পারিনি বলে আমার আজো আফসোস হয়।
হোটেলফ্লাইওভার এবং মসজিদে হারামের সীমানার মাঝামাঝিতে এমন একটি মূল‍্যবান জায়গা খালি থাকার কথা নয়।কিন্তু এ জায়গাটি খালি।কারণ জায়গাটা ঐতিহাসিক।এই খালি জায়গাটিতে অন্ধকার যুগে আরবের লোকেরা তাদের কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দিতো।আর এজন‍্য এই অভিশপ্ত জায়গাটিতে সৌদি সরকার কোন ভবন নির্মান করেনি।জায়গাটিতে কোনো স্মৃতিচিহ্ন বা ফলক নেই।শুধু ঘিরে রাখা হয়েছে।যারা ইতিহাস জানেন, শুধু তারাই জায়গাটি দেখতে আসেন।

জায়গায়টিতে গেলে নিজের অজান্তেই আপনার চোখে পানি এসে পড়বে।হ্রদয় বিগলিত হবে।মানসপটে ভেসে ওঠবে জাহেলি যুগের সে বর্বরতার করুণচিত্র। যে যুগে কন্যা সন্তানের পিতা হওয়া ছিল ভীষণ লজ্জার বিষয়। সমাজে তার মুখ দেখানো হতো দায়। যে দায় এড়াতে আপন কন্যা সন্তানকে জীবন্ত পুঁতে রাখতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করতো না আরবরা।মক্কা এবং আশেপাশের এলাকার আরবরা এই খালি জায়গাটিতে এনে তাদের কন‍্যা সন্তানদের এনে জীবন্ত পুঁতে দিতো।কী নির্মম বর্বরতা!
সাহাবী দাহিয়াতুল কালবী(রাঃ) এর একটি কাহিনী ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে।যিনি নিজের কন‍্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দিয়েছিলেন।কাহিনীটি এরকম।দাহিয়াতুল কালবী(রাঃ) মুসলমান হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (সা.)তাঁকে বললেন,তুমি মুসলমান হয়েছ। আল্লাহপাক তোমার সব গোনাহ মাফ করে দিয়েছেন।তখন তিনি দুই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন, হে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)সব গোনাহ মাফ হতে পারে কিন্ত একটি গোনাহ আমার মাফ হবে না। রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেন,তুমি, কী মারাত্মক কোন পাপ করেছ?তখন তিনি উচ্চস্বরে কাঁদতে শুরু করলেন।বল্লেন,হে আল্লাহর রাসুল,আমি যখন একটি সফরে যাই তখন আমার স্ত্রী গর্ভবতী ছিল। আমি যাওয়ার সময় বলে গেলাম যদি আমার মেয়ে সন্তান হয় তাকে জীবিত কবর দিতে।আমার একটি কন‍্যা সন্তান হয়।কিন্তু আমার স্ত্রী সন্তানের মায়ার তাকে জীবন্ত কবর দেয়া থেকে বিরত থাকেন এবং পরম মমতায় লালন পালন করে তাকে বড় করে তোলেন। আমি সফর থেকে চার বৎসর পর বাড়ি আসলে একটি মেয়ে আমার কাছে এসে আব্বু আব্বু বলে ডাকতে শুরু করে।আমি অবাক হয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম-কে এই মেয়ে? স্ত্রী ভয়ে ভয়ে জবাব দেন ,এটি তোমারই মেয়ে। আমি তাকে ধমক দিয়ে বল্লাম-কেন তুমি এই মেয়েটিকে ছোট কালেই জীবিত কবর দাওনি?তিনি বলেন,তুমি নজর করে দেখ তোমাকে আল্লাহতা’আলা কেমনফুটফুটে সুন্দর একটি নিয়ামত প্রদান করেছেন। সে তোমার মতই সুন্দর হয়েছে।আমি তার নাম রেখেছি জামিলা। এত সুন্দর মেয়েকে আমি কেমন করে জীবিত কবর দেবো!
রাতে যখন বিছানায় ঘুমাতে গেলাম মেয়েটা আমাকে আব্বু বলে একবার আামার দিকে ফিরে, আম্মু বলে তার মায়ের দিকে ফিরে। জমিলার উপর আমার মায়া হল। আমি চিন্তা করতে লাগলাম এত সুন্দর একটা মেয়ে আমি তাকে কিভাবে জীবিত কবর দেবো?কিন্তু পরক্ষণে মনে জাগল সমাজে আমি বন্ধু বান্ধবদের কি জবাব দেবো।?তারা তো আমাকে উপহাস করবে। তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আগামীকাল সকালে আমি পাহাড়ের কিনারে গর্ত করে মেয়েকে জীবিত কবর দিয়ে আসবো।সকালে উঠে স্ত্রীকে বললাম, জামিলাকে গোসল করিয়ে কিছু খাইয়ে দাও। তাকে নিয়ে বেড়াতে যাবো।আমার স্ত্রী মেয়েকে গোসল করিয়ে খাইয়ে দাইয়ে নতুন জমা পরিয়ে দেন ।আমি তাকে নিয়ে রওয়ানা হলাম।মেয়েটাকে সাথে নিয়ে আমি বহু দুরে পাহাড়ের পাশে গিয়ে গর্ত করতে লাগলাম। গর্ত করার সময় মাটির ছোট ছোট টুকরা আমার দাড়ির উপরে এসে পড়তে লাগলো।জমিলা আমার পাশে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে দাড়িগুলি সাফ করে বারবার বলছিলো,বাবা এটা কিসের গর্ত? এই গর্ত কার জন্য করছ? আমি জামিলা কে বললাম তুমি দুরে গিয়ে খেলা কর। আমি মনে মনে বললাম, কিছুক্ষণ পরে তুমি বুঝতে পারবে এটা কিসের গর্ত।গর্ত শেষ হলে আমি ডাকলাম ‘জামিলা এসে দেখে যাও তো মা গর্তের ভিতরে কি যেন দেখা যায়!মেয়েটি আমাকে আব্বু আব্বু বলে দুর থেকে দৌড়ে গর্তের পাশে এসে ভিতরে তাকিয়ে বলে,- আব্বু কৈ? গর্তের ভিতর তো কিছু দেখা যায় না ।হে রাসূলুল্লাহ (সাঃ),আমি নিষ্ঠুর পিতা। আমি কত বড় নির্দয় পিতা। আমার যে একুট মায়া লাগল না। আমি পিছন দিক দিয়ে জামিলা কে ধাক্কা মেরে গর্তের ভিতরে ফেলে দিলাম।গর্তের চারি দিকের পাথর ও মাটি যখন চাপা দিতে থাকি। জামিলা আমার দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে,বাবা তুমি এই ভাবে আমাকে মেরে ফেলোনা। মা শুনলে সহৃ করতে পারবে না। আমাকে ছেড়ে দাও কোন দিন আর আমি তোমাকে বাবা বলে ডাকব না। কোন দিন তোমাকে আমার চেহারা দেখাব না। আমাকে প্রাণে মেরো না বাবা!
জামিলা গর্ত থেকে হাত দুটো উচু করে বারবার চিৎকার করতে লাগলো।কিন্তু আমি তার কোন কথা না শুনে তাকে মাটি চাপা দিয়ে ঘরে ফিরে এলাম।হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ আমার সব গোনাহ মাফ করলেও কন‍্যা হত‍্যার এই গোনাহ আমাকে মাফ করবেন না। আজও আমি প্রতি রাতে জামিলার সেই ডাক -বাবা আমাকে বাঁচাও বলে সেই চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পাই।
তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বললেন, ওহে দাহিয়াতুল কালবী ,শোন !তুমি যেই দিন এই অন্যায় পাপ কাজ করেছো তখন তুমি কাফের ছিলে। তুমি না বুঝে এ পাপ কাজ করেছ। আজ যখন তুমি মুসলমান হয়েছ, কালেমা পড়েছ, আমার সাহাবী হয়েছ,ইসলামের সুশীতল ছায়ার নিচে আশ্রয় নিয়েছ, আল্লাহ বাব্বুল আলামিন তোমার সব পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন।

শুধু দাহিয়া বিন কালবী নয় আরো অনেক সাহাবীর কথা ইতিহাসে উঠে অসেছে যারা তাদের কন‍্যাদের জীবন্ত কবর দিয়েছেন।এদেরই একজন তামিম গোত্রের প্রধান কায়েস বিন আসেম।ইসলাম গ্রহণের পর একবার যখন নবী করিম (সাঃ)এর দরবারে বসে কথাপ্রসঙ্গে তিনি নিজ হাতে কীভাবে তার নিজের জীবন্ত কন্যাকে মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করলেন তার বর্ণনা দেন। মেয়েটি কীভাবে বাবা বাবা বলে চিৎকার-করছিল তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। বর্ণনা শুনে নবী করিম (সাঃ)এর দু’চোখে অশ্রুধারা বয়ে চলছিল।তার দাড়ি মোবারক ভিজে গিয়েছিল।

জানা যায়,জাহেলিয়াত যুগে প্রধানত দুটি কারণে কন্যাসন্তানকে জীবিত অবস্থায় মাটিতে পুতে ফেলা হতো।একটি কারণ হলো, তারা মনে করত ফেরেশতারা আল্লাহর কন্যা। ফলে কন্যাসন্তানকে আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করাই শ্রেয়। দ্বিতীয় কারণ হলো, কন্যাদের ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে দরিদ্র হওয়ার আশঙ্কা, যুদ্ধে পরাজিত হলে শত্রুরা কন্যাদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার ভয় ও বিয়ে দিলে জামাতার কাছে অপমানিত হওয়ার ভয়।

যদি কেউ অপমান সহ্য করে কন্যাসন্তানকে জীবিত রাখার ইচ্ছা পোষণ করত, তাহলে একটি পশমি জামা পরিয়ে তাকে পশু চরানোর জন্য চারণভূমিতে পাঠিয়ে দিত। অন্যথায় কন্যার বয়স যখন ছয় বছর হতো, তখন তার বাবা মাঠে একটি কূপ খনন করত।তারপর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে বলত, আজ মেয়েকে নিয়ে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যাব। তাকে উত্তম জামাকাপড় পরিয়ে সুগন্ধি দিয়ে সাজিয়ে দাও।

তারপর মেয়েকে নিয়ে ওই কূপের কাছে গিয়ে বলত, দেখো তো মা, এ কূপের ভেতরে কী আছে? বাবার কথামতো মেয়ে কূপের কাছে গেলেই বাবা পেছন দিক থেকে ধাক্কা দিয়ে কূপে ফেলে দিত। তারপর মাটি দিয়ে কূপটি ভরে ফেলত।

এটাই ছিল ইসলামপূর্ব জাহেলিয়াত যুগের চিত্র।সে সমাজে মানুষ হিসেবে কন্যা সন্তানদের কোনো সামাজিক স্বীকৃতি ছিল না। জীবনের সব ক্ষেত্রে তারা ছিল অবহেলিত, উপেক্ষিত, লাঞ্ছিত আর করুণার পাত্রী। কন্যা সন্তান জন্ম হওয়া তাদের কাছে অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবে গণ্য হতো। অনেক আরব গোত্রে কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তারা অপমানিত এবং লজ্জিত হতো। আর এ লজ্জা এবং অপমান থেকে পরিত্রাণ লাভের আশায় তাদের জীবন্ত কবর দিতো।কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেওয়াকে তারা বৈধ মনে করতো। এটা নিয়ে তাদের মধ্যে অনুশোচনার লেশমাত্র ছিল না।

Search
Categories
Read More
Other
March Field Air Museum & Beyond: Must-See Spots Near Prose Rancho Belago
Living near Prose Rancho Belago, you're surrounded by a wealth of exciting attractions. Start...
By Carlos Steven 2025-06-24 16:20:56 0 484
Other
Bird Control: Safeguarding Structures and Health
  Birds are ubiquitous in our environment — pigeons flock to ledges, starlings roost...
By Andy Marves 2025-07-01 14:27:26 0 171
Other
Bird Control Solutions for Commercial Properties
  Birds, while often admired for their beauty and songs, can pose serious challenges when...
By Andy Marves 2025-07-03 12:50:12 0 57
Other
Managing Avian Intrusions: Sprague's Bird Control Strategies
  In the world of commercial pest management, bird intrusions often go under the...
By Andy Marves 2025-07-01 15:14:02 0 164
Other
Historic Restoration and Preservation by Sixth Avenue Custom
  Preserving the past is an act of respect, craftsmanship, and vision. As more homeowners,...
By Robert Marlo 2025-06-23 16:24:17 0 528
লগইন বাংলাদেশ https://loginbangladesh.com